ভেতর থেকে বোবা!

এমনটা দিন নেই যে এখানে লিখবো ভাবি না, প্রত্যেকদিন কতো যে এলোমেলো কথা গুলো মনে উঁকি মারে, বারবার মনে হয় সেগুলোকে হারিয়ে যেতে না দিই, লিখে রাখি কোন পাতায়। কিন্তু সেটা আর করা হয়ে উঠছে না। আসলে আমি কখনোই ভালো লেখক ছিলাম না, স্কুলের হাতের লেখা মাসের পর মাস জুড়ে ফাঁকি মেরে যেতাম, আর এখানেও তাই করছি।

তবে একটা পার্থক্য রয়েছে, তখন লিখতে বোরিং ফিল করতাম, ছোট বেলায় ব্র্যাক স্কুলে পড়েছি গ্রামে সেখানে প্রত্যেকটা অধ্যায়ের নীচে কপি বলে একটা সেকশন থাকতো, আর সেটাই দৈনিক খাতায় লিখে রিপিট করতে হতো। বলুন তো কে একই লেখা বারবার করে লাইনের পর লাইন লিখতে ভালোবাসে? তাই সহজেই বোর হয়ে যেতাম আর লেখা হয়ে উঠতো না। বেশিরভাগ সহপাঠীরায় সেগুলো অনুসরণ করতো আর হাতের লেখার বেশ উন্নতি ও হয়েছিল তাদের। কিন্তু কি যায় আসে? হাতে কিছু লিখিনা ৪-৫ বছর হতে চললো, এখনকার দিনে হাতের লেখার কিই বা মূল্য! তাই ওই স্কুলের হাতের লেখার ফাঁকি আমাকে খুব একটা ক্ষতি স্বাধিত করতে পারে নি।

কিন্তু এখন প্রত্যেকদিন নিজের কথা লিখতে ইচ্ছা করে, কিন্তু তাও কেন লিখতে পারি না আমি? নিজের সাথে বেশিরভাগ সময় বিড়বিড় করি, কি বলি না বলি কোন সিরিয়াল নেই, মনের মধ্যের অনেক অযৌক্তিক অনুভূতি জন্মে আছে যা খাতায়/ব্লগে রূপ দিতে ইচ্ছা করে, কিন্তু এতো চরম ইচ্ছা থাকা শর্তেও কেন যেন বারবার লিখতে ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছি।

তাহলে কি আমি ভেতর থেকে কুঁড়ে হয়ে গেছি, নাকি ভেতরে বোবা হয়ে গেছি। লেখার চেষ্টাও করেছি বেশ, কিন্তু লিখতে এসে যেনো ভাষা খুঁজে পাই না, কিন্তু মনের মধ্যে লাখো শব্দ ঢেউ খেলছে। মনে হয় শব্দ মেলাতে ভুলে গেছি, আসলে আমি বাংলা ব্যাকরণকেও সারাজীবন ফাঁকি মেরেই এসেছি, তাই সঠিক ভাষার ব্যাবহার, বানান, বা কবির মতো কঠিন কোন শব্দও জানি না। হাইস্কুলে শুধু নৈবিত্তিক পরীক্ষার জন্য বাংলা ব্যাকরণ পড়তো সবাই, আমি সেই রিস্ক উঠাই নি কখনো, খেয়ে কাজ নেই ৫০ টা খুচরো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য দাঁত ভেঙে এত কঠিন জিনিস পড়বো!

মনের ভাব লিপিবদ্ধ করার এতো আকাঙ্খা পূর্বে জাগেনি কখনো, ডোন্ট কেয়ার বলেই পেরিয়ে এসেছি অনেক কিছু, এখন লাইফ ই আমাকে ডোন্ট কেয়ার করে দিয়েছে, নিজের অস্তিত্ব মিসে যেতে লেগেছে। ডাস্টার দিয়ে জীবন নামের বোর্ড থেকে আমাকে ঝেড়ে মুছে ছাফ করে দেওয়া হয়েছে। যে আমিই ছিলাম অর্থ বহুল কোন অংক, কিন্তু এখন আর সাদা চকের ধুলো ছাড়া আর কিছুই নই!

ওয়েল, অনেক কিছু আজকে গড়গড় করে লিখে ফেললাম, কি লিখলাম নিজেও জানি না, কিন্তু বেশ হালকা লাগছে কেন জানি। এভাবেই হয়তো ইচ্ছাটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আমার শোনার এখন কেউ নেই, তুমি যে আমার মুখের সামনে দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছো, এখন ঠিক কাঁচের দেওয়ালের এপাড়ে আমি!

লেখকের সম্পর্কে

কমেন্ট করুন

Your sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.